২০১ গম্বুজ মসজিদ (201 Gombuj Masjid/The 201 Dome Mosque) টাঙ্গাইল জেলায় অবস্থিত। একুরেট ঠিকানা গ্রামের নাম দক্ষিণ পাথালিয়া, গোপালপুর উপজেলা, টাঙ্গাইল জেলা। এটি সারা বিশ্বের মধ্যে সর্ব অধিক সংখ্যক গম্বুজ সম্বলিত মসজিদ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এর মিনারের উচ্চতার দিক থেকে মসজিদটির অবস্থান দ্বিতীয়। ২০১ টি কারুকার্য করা গম্বুজ যা দেখতে অসম্ভব সুন্দর লাগে আর এই কারনেই এই মসজিদটির নাম হয়েছে ২০১ গম্বুজ মসজিদ।
আরো পড়ুন- ষাট গম্বুজ মসজিদ
মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম কল্যাণ ট্রাস্টের উদ্যোগে ১৫ বিঘা জায়গার ওপর এই বিশাল মসজিদটি নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসে। এই মসজিদটি স্কয়ার। চারিদিকে সমান দুই তলা বিশিষ্ট এই মসজিদের দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থ দুটিই হচ্ছে ১৪৪ ফুট। ৮১ ফুট উচ্চতায় সুন্দর একটি গম্বুজ রয়েছে মসজিদের মাঝখানে। আর মূল গম্বুজের চারপাশে ২০১ গম্বুজ রয়েছে যেগুলোর উচ্চতা সব ১৭ ফিট করে। এছাড়াও পূর্ব ও পশ্চিম পাশে সুন্দর সুন্দর ৪টি ৮১ ফিট উচ্চতায় গম্বুজ রয়েছে। আর মসজিদের মূল মিনার যার উচ্চতা ৪৫১ ফুট। অসাধারণ সৌন্দর্য মন্ডিত এই মিনারটি। ১৫ হাজার মুসল্লী একসাথে নামাজ পড়তে পারবে এই মসজিদে। পুরা কোরআন শরীফ লেখা রয়েছে মসজিদের দেয়াল জুড়ে। ৫০ মণ পিতল দিয়ে তৈরি হয়েছে এই মসজিদের প্রধান দরজা।
এছাড়াও এই ২০১ গম্বুজ মসজিদ এর পাশে রয়েছে একটি বৃদ্ধাশ্রম, একটি এতিমখানা এবং বিনামূল্যে চিকিৎসার জন্য একটি ছোট্ট হাসপাতাল এবং লাশ রাখার জন্য একটা সুন্দর হিমাগার। পুনর্বাসনের ব্যবস্থা রয়েছে দুস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য।
২০১ গম্বুজ মসজিদে যাবেন যেভাবে
আপনি যে দেশের যে প্রান্তেই থাকুন না কেন ২০১ গম্বুজ মসজিদ দেখতে গেলে সর্বপ্রথম টাঙ্গাইল জেলা সদরে যেতে হবে। টাঙ্গাইল সদর থেকে গোপালপুর উপজেলা ১০ কিলোমিটার দূরে আর মসজিদটি গোপালপুর উপজেলার মধ্যে হলেও টাঙ্গাইল সদর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে। টাঙ্গাইল সদর থেকে অটো সিএনজি ভাড়া করে ২০১ গম্বুজ মসজিদ ভ্রমণ করে আসতে পারেন।
ঢাকা থেকে যাবেন যেভাবে
ঢাকা মহাকালী কিংবা গাবতলী বাস স্ট্যান্ড থেকে যেতে পারবেন। মহাখালী থেকে দ্রুতগামী বাসএ ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকার মধ্যে ভাড়ায় গোপালপুর যেতে পারবেন। সেখান থেকে সিএনজি, ভ্যান, অটোরিকশা, যেকোনো কিছুতে করে ২০১ গম্বুজ মসজিদে যেতে পারবেন। আর এসি বাসে যদি যেতে চান তাহলে কল্যাণপুর বাস স্ট্যান্ড থেকে ধনবাড়ী গামি এসি বাস যায় সেই বাসে চড়ে ঘাটাইল ক্যান্টনমেন্ট নেমে সিএনজি অথবা অটোরিক্সা করে গোপালপুর যেতে পারবেন। ফিরে আসার সময় গোপালপুর থেকে বাসে আসতে হবে। বিকাল পাঁচটার দিকে ঢাকাগামী বাস ছেড়ে দেয় গোপালপুর থেকে।
যেখানে থাকবেন
ঢাকা থেকে টাঙ্গাইল খুব একটা বেশি দূর নয়। আপনি ঢাকা থেকে ভোরবেলা রওনা দিলে 101 গম্বুজ মসজিদ সুন্দরভাবে রাত নয়টা দশটার মধ্যে ফিরে আসতে পারবেন। তার পরেও যদি আপনি থাকতে চান তাহলে এলেঙ্গা কিংবা টাঙ্গাইল সদরে অনেক ধরনের ভালো ভালো হোটেল রয়েছে আপনি যে কোন হোটেলে থাকতে পারবেন।
খাবেন যেখানে
মসজিদের সামনে খাবার হোলির কিছু আছে কিন্তু খুব একটা ভালো মানে নেই তবে সকালের নাস্তা এবং দুপুরে খাবার সবই পাওয়া যায় এছাড়াও যদি আপনি গোপালপুর বাজারে যান তাহলে ওখানে ভালো ভালো হোটেল আছে ওখান থেকে খাবার কিনে নিয়ে যেতে পারেন।
কিছু সতর্কতা
আপনি যদি দিনে যেয়ে দিনের মধ্যেই আসতে চান তাহলে ঢাকা থেকে খুব ভোরে আপনাকে রওনা দিতে হবে। যদি রাস্তায় জ্যাম না থাকে তাহলে ভালো ভাবে আবার সন্ধ্যা কিংবা রাত ৯ টার মধ্যে ফিরে আসতে পারবেন। আর যদি রাস্তায় জ্যাম থাকে তাহলে একটু সমস্যা হতে পারে। তবে একটা কথা সবসময় মনে রাখবেন গোপালপুর থেকে ঢাকায় আসার বাস কিন্তু সন্ধ্যার আগেই বন্ধ হয়ে যায়। সেদিকটা একটু খেয়াল রাখবেন। তবে টাঙ্গাইল থেকে সব সময় বাস ঢাকায় যাওয়া আসা করে, কোন সমস্যা হবে না। আর ভাড়ার ব্যাপারটি সময়ের পরিবর্তনে পরিবর্তন হতে পারে। আর সব সময় যেটাই করুন খাবার হোটেল কিংবা সিএনজি ভাড়া সবকিছু দাম দর করে নিবেন।