গ্রীন ভ্যালী পার্ক Green Valley Park
গ্রীন ভ্যালী পার্ক (Green Valley Park) রাজশাহী বিভাগের নাটোর জেলার লালপুর থানা থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এটি একটি চমৎকার বিনোদন পার্ক। এই গ্রীন ভ্যালি পার্কে যদি আপনার বাচ্চাকে নিয়ে একবার ঢোকেন আপনার বাচ্চা আর বের হতে চাবে না। সকল বয়সী মানুষের জন্য এ পার্কটি উম্মুক্ত করা হয়েছে। এই পার্কের জায়গার পরিমাণ ১২৩ বিঘা। এখানে চমৎকার সুন্দর সুন্দর রাইড রয়েছে। বাচ্চাদের জন্য, বড়দের জন্য, সবার জন্য, যেমন ছোট ট্রেন, ছোট বুলেট ট্রেন, মেরিগো রাউন্ড, নাগরদোলা, পাইরেট শিপ, স্পিড বোর্ড, পা দিয়ে প্যাডেল করা বোর্ড, হানি সুইং, আরো অনেক রাইট রয়েছে যা বলে শেষ করা যাবে না। এখানে ৩০ একর জায়গা জুড়ে এত সুন্দর একটি মনোরম লেক আছে যা আপনারা দেখলেই মনটা জুড়িয়ে যাবে। কৃত্রিম পার্ক হলেও দেখে মনে হবে এটি একটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। এমন একটি জায়গায় এত সুন্দর পার্ক তৈরি করেছে ভাবা যায় না।
আরো পড়ুন- আহসান মঞ্জীল
এই গ্রীন ভ্যালি পার্কে রাইট ছাড়াও আরো অনেক সুযোগ সুবিধা রয়েছে যেমন আপনি এখানে নাটক বা সিনেমার শুটিং করতে পারবেন, শুটিং স্পট রয়েছে। যদি আপনারা পিকনিক করতে যান পিকনিকের স্পট রয়েছে, এখানে রান্নাবান্না ব্যবস্থা রয়েছে, অ্যাডভেঞ্চার রাইড আছে, আপনি যোদি কন্সার্ট করতে চান সে ব্যবস্থাও রয়েছে, সুন্দর মঞ্চ আছে কনসার্ট করার জন্য। সার্বক্ষণিক বিদ্যুতের ব্যবস্থা আছে, হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে গেলে তারা নিজস্ব বিদ্যুৎ দিয়ে আপনাদেরকে চালিয়ে নেবে। নামাজের জন্য সুন্দর সুব্যবস্থা রয়েছে। কার পারকিং, বিভিন্ন ধরনের দোকান, সভা-সেমিনার এবং তাই নয় ওখানে থাকতে চাইলে আপনি আবাসিক হোটেলের ব্যবসা ব্যবস্থা আছে আপনি থাকতে পারবেন।
সময়সূচী এবং টিকেট মূল্য
গ্রীন ভ্যালি পার্কে ঢুকতে চাইলে আপনাকে গুনতে হবে মাত্র ৫০ টাকা। এই পার্কটি সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত প্রতিদিন খোলা থাকে। তবে শীত ও গরমের সময় খোলার টাইম টা একটু পরিবর্তন হতে পারে।
প্রথমে বলি গাড়ি পার্কিং- আপনি যদি গাড়ি পার্কিং করতে চান বিভিন্ন ধরনের গাড়ি হিসেবে ২০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে রাখতে পারবেন। ওয়াটার পার্কের টিকেট ৩০০ টাকা করে নেয়, খোলা থাকে দুপুর ১২ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত। ওয়াটার পার্কের লকার ফি ৫০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত। এছাড়াও রয়েছে আরও বিভিন্ন ধরনের ১০টি রাইড, প্রতিটি শেয়ারের মূল্য ৩০ থেকে ৫০ টাকা নিবে। এর ভিতর কোন ধরনের খাবার নিয়ে যেতে পারবেন না। সময়ের পরিবর্তনে এই টিকেট মূল্য পরিবর্তন হতে পারে।
যাবেন যেভাবে
আপনি যদি ঢাকা থেকে আসতে চান তাহলে ঢাকা গাবতলী থেকে ঈশ্বরদী-বাঘা তে বিভিন্ন ধরনের বাস যাওয়া-আসা করে। আপনাকে বাঘাতে নামতে হবে, নেমে সিএনজি করে লালপুর উপজেলা যেতে হবে। আর যদি আপনি রাজশাহী থেকে যেতে চান তাহলে চারঘাট বাঘাবাড়ী বাসে উঠে বাঘাতে যেতে পারবেন। এছাড়া নাটোর থেকে যেতে চাইলে বাইপাসে লালপুর যাওয়ার বাস পাওয়া যায় সব সময়।
আর যদি ট্রেনে যেতে চান তাহলে আব্দুল্লাহপুর রেলওয়ে জংশন এ নামবেন। আব্দুল্লাহপুর জংশন থেকে গ্রীন ভ্যালি পার্ক মাত্র ১২ কিলোমিটার। সিএনজি কিংবা অটো করে যেতে পারবেন।
রাতে থাকতে চাইলে
নাটোর সদরের খুব সুন্দর সুন্দর এবং মনোরম পরিবেশে খুব ভালো মানের আবাসিক হোটেল বা বোডিং আছে। যেমন ধরুন হোটেল রুকসানা, হোটেল ভিআইপি, এসমস্ত হোটেলে আপনি মাত্র ৩০০ টাকা থেকে ৭০০ টাকার মধ্যেই খুব সুন্দর ভাবে থাকতে পারবেন। এছাড়াও প্রতিটি জেলায় সার্কিট হাউজ রয়েছে, ডাকবাংলো রয়েছে, এছাড়াও রয়েছে নাটোরের বিভিন্ন ধরনের বোর্ডিং, হোটেল রাজ, হোটেল মিল্লাত, হোটেল প্রিন্স, আপনার যেখানে খুশি সেখানে থাকতে পারবেন কম টাকার মধ্যেই।
খাবেন কোথায়
প্রতিটি জেলা সদরের মোটামুটি ছোট-বড়-মাঝারি হোটেল, রেস্টুরেন্ট আছে। ঠিক তেমনই সেরকম হোটেল-রেস্টুরেন্ট আপনি পাবেন। এর মধ্যে আপনি ইসলামিয়া পঁচুর হোটেল এ খেতে পারেন। আবার স্টেশন দিয়ে যদি আসেন তাহলে স্টেশনে নেমে নয়ন হোটেলে আপনি খেতে পারেন, খুব সুনাম আছে এই হোটেলের। এছাড়াও নাটোরের চলনবিল এর রানী ভবানী সুস্বাদু মাছ খাওয়ার কথা ভুলে যাবেন না, অবশ্যই মাছ খাবেন। আরেকটা কথা আমরা সবাই জানি নাটোরের কাঁচাগোল্লা বিখ্যাত, সেজন্য কাঁচাগোল্লা না খেয়ে আসলে আপনার নাটোর ভ্রমণ বৃথা হয়ে যাবে। অবশ্যই নাটোরের কাঁচাগোল্লা খেয়ে এবং নিয়ে আসবেন।
গ্যীন ভ্যালীতে যোগাযোগ করবেন যেভাবে।
মোবাইল: ০১৭১২-১৫১৩৮৮, ০১৭১২-০৪০৫৭৩