sariakandi

সারিয়াকান্দি পানি বন্দর। Shariakandi

আমরা এখন প্রায় সবাই ঘুরতে ভালোবাসি। ছুটির দিন হলে তো কথায় নাই পরিবারকে বিনোদন দেওয়ার জন্য আমরা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যাই। শুধু পরিবার নয় অনেকে একা, আবার বান্ধবীদের নিয়েও ঘুরতে যায়। আর ঘুরতে যাওয়ার জায়গা যদি হয় নদীকেন্দ্রিক তাহলে তো কোন কথায় নেই। আমরা সবাই জানি বগুড়াতে অনেক সুন্দর সুন্দর জায়গা আছে এর মধ্যে সারিয়াকান্দি হচ্ছে নদীকেন্দ্রিক। যেখানে ভ্রমণকারীরা যায়। কারণ এখানে শুধু পানি নয় প্রাকৃতিক মনোরম পরিবেশ, যা দেখলে দর্শনার্থীদের মন ভরে যাবে।

খুব সুন্দর খোলামেলা প্রাকৃতিক পরিবেশ। এখানে রয়েছে ২ টি ঘাট একটি হলো কালিতলা ঘাট আরেকটি হলো প্রেম যমুনার ঘাট। তবে প্রেম যমুনার ঘাটে দর্শনার্থীদের প্রচুর ভীড় জমে। বগুড়া শহর থেকে ২২ কিলোমিটার পূর্বে এই সারিয়াকান্দি অবস্থিত। পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধিনে এখানে একটি বাঁধ তৈরি করা হয়েছে।

এটি মূলত যমুনা নদির ভাঙ্গন রক্ষার্থে তৈরি করা হয়েছে। এখানে ভ্রমণকারিদের জন্য পানিতে রয়েছে ইঞ্জিন নৌকা আবার ছই ছারা নৌকা। এই নৌকাতে এই চর থেকে ওই চরে ঘুরে আসা যায়। যমুনা নদি অনেক বড়। সারিয়াকান্দিতে এই যমুনা নদীর বুকে প্রেম যমুনার ঘাটটা খুব সুন্দর।

আরো পড়ুন- বগুড়া মহাস্থানগড়

নদীতে অনেক চর আছে। যখন ভ্রমণকারিরা ভ্রমণ করতে যাবে তখন হঠাৎ এই চর দেখতে পাবেন। অনেকে নৌকাতে ঘুরতে গেলে এরকম চর পাইলে সেখানে নেমে গোসলও করে। এটা নতুন একটা অভিজ্ঞতা। এই যমুনা নদিতে যে বাঁধ নির্মাণ করা হয় তার নাম গ্রোয়েন বাঁধ।

বিশ্ব ব্যাংকের  অর্তায়নে  সারিয়াকান্দির দীঘলকান্দি, কালিতলা ও দেব ডাঙ্গায় ৫৭০ কোটি টাকা ব্যায় করেন পানি উন্নয়ন বোর্ড। এই বাঁধগুলো নির্মাণের ফলে সারিয়াকান্দি ধ্বংসের কবল থেকে রক্ষা পেয়েছে। এবং এই বাঁধ গুলো দেওয়াতে নদীর সৌন্দর্য বেড়েছে। আর ভ্রমণ কারিদের মন কেড়েছে।

এই সারিয়াকান্দিতে একটা বিষয় লক্ষ্য করলে বুঝতে পারবেন যে এখানে ঘুরতে গেলে ওখানকার মানুষ গুলো এতো ভালো সব সময় আপনার মন জয় করার চেষ্টা করবে। আপনাকে সব কিছুতে সাহায্য করবে। সব সময় তারা দর্শনার্থীদের আপ্যায়ন করে। এই সারিয়াকান্দি শুধু বিনোদনের জন্যই যায় না বরং সারিয়াকান্দি এখন পিকনিক স্পর্ট, সুটিং স্পর্ট হিসাবেও ব্যবহার করা হয়।

যেভাবে যাবেন

সারিয়াকান্দিতে  আসার জন্য প্রথমে ঢাকা থেকে বগুড়াতে আসতে হবে। বগুড়ায় আসার জন্য কল্যাণপুর বাস স্ট্যান্ড থেকে সহজেই আসতে পারবেন। এখানে এসি নন এসি সব বাস পাবেন। এসি বাসের ক্ষেত্রে ভাড়া পরবে ৭০০ থেকে ১০০০ টাকা। আর নন এসি বাসের ভাড়া পরবে ৫৫০ টাকা। ঢাকা থেকে এই বাস আপনাকে বগুড়ায় নিয়ে যাবে। আর বগুড়ায় আপনাকে সাতমাথায় অথবা ঠনঠনিয়া বাস স্ট্যান্ড এ নামিয়ে দিবে।

এরপর সাতমাথা থেকে রিক্সা বা অটোতে চেলোপাড়া সি এন জি স্ট্যান্ড যেতে হবে। সাতমাথা থেকে চেলোপাড়া অটো কিংবা রিক্সারে যেতে ভাড়া লাগবে ২০ টাকা। তারপর চেলোপাড়া থেকে সিএনজিতে সোজা সারিয়াকান্দিতে যেতে পারবেন। সিএনজিতে চেলোপাড়া থেকে সারিয়াকান্দির ভাড়া নেয় ৫০ টাকা। ওখান থেকে মাত্র ১০ টাকা ভ্যান ভাড়া দিয়ে বাঁধে অর্থাৎ যমুনা নদীতে যেতে পারবেন।

 সময়ের ব্যবধানে ভাড়া বাড়বে কিন্তু কখনো কমবে না। আবার আপনাদের নিজস্ব পরিবহণ থাকলে তো কোন কথায় নাই নিজস্ব পরিবহণে আপনারা আসতে পারবেন সারিয়াকান্দিতে।

কোথায় থাকবেন

থাকার জন্য বগুড়াতে অনেক ভালো মানের হোটেল আছে। এর মধ্যে মোটেল ক্যাসেল, এম এইচ মাটিডালি, সেফওয়ে মোটেল চারমাথা, নাচ গার্ডেন (ফোর স্টার মানের হোটেল ),আর ফাইভ স্টার হোটেলে থাকতে চাইলে মম ইন হোটেল, নর্থওয়ে মোটেল কলোনী বাজার, সেঞ্চুরি মোটেল চারমাথা এই হোটেল গুলোতে আপনি রাত্রীযাপন করতে পারেন। এই গুলা প্রত্যেকটাই নিরিবিলি পরিবেশ। এছাড়াও শহরের একেবারে প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত আকবরিয়া হোটেল। এছাড়াও বেশ কয়েকটি হোটেল আছে নবাব বাড়ি রোডে।

Spread the love

Leave a Comment

Your email address will not be published.